লেমন ডিটক্স ডায়েট করে ওজন কমানো মাত্র ৭ দিনে: প্রিয় পাঠক আশা করি ভালো আছেন। আজকে আমরা লেমন ডিটক্স ডায়েট করে ওজন কমানো মাত্র ৭ দিনে কমানোর টেকনিক নিয়ে কিছু লেখার চেস্টা করবো।
লেমন ডিটক্স ডায়েটিং কি?
লেবুর ডিটক্স ডায়েটিং একটি বিশেষ ডায়েট যার নিয়মিত খাবারে সিংহভাগ লেবুর পরিমানে সমৃদ্ধ হয়। ১৯৪০এর দশকে স্ট্যানলি ব্যারো এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এর আরেক নাম হলো মাস্টার ক্লিঞ্জার কারণ লেমনেড আপনার শরীরের কোষ থেকে বিষাক্ত টক্সিন নিষ্কাশন করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আপনাকে ভেতর থেকে চাঙ্গা করে তোলে।
লেবু কেন গুরুতবপুর্ণ?
এর সাইট্রিক এসিড লিভার এর যত্ন নেয় ও ডিটক্সিফিকেশন করে। পাশাপাশি স্থূলতা কমায় ও ত্বকের জেল্লা ও বাড়ায়।
এই ডায়েটে প্রতিদিন ৬০০ক্যালোরি অব্দি সর্বোচ্চ গ্রহণ করা যায়। সেলিব্রেটি রাও তাদের ব্যস্ত জীবনে ফিট থাকতে এই ডায়েট ফলো করে থাকেন।
লেবুতে ভরপুর ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, বি৬, বি৯, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, দস্তা, লোহা,ক্যালশিয়াম, ফসফরাস ও কিছু পরিমানে কার্বোহাইড্রেট ও থাকে।
আসুন জেনে নেই লেবু কেন খাবেন।
ক্ষত সারাতে
লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ক্ষতস্থান দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। হাড়, তরুনাস্থি ও টিস্যুর স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
লেবুর মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করে। স্নায়ু ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়। ফুসফুস পরিষ্কার করে হাঁপানি সমস্যার উপশম করে।
হজমে সাহায্য করে
লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। বদহজম, বুক জ্বালার সমস্যাও সমাধান করে লেবু পানি। সেইসঙ্গে পরিপাক নালী থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।
ত্বক পরিষ্কারক
লেবুতে ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড রয়েছে। এই রস শুধু ত্বকের তেলতেলে ভাবই দূর করে না, সেই সঙ্গে ত্বককে উজ্জ্বল করে দেয়। তাছাড়া লেবুর রস বয়সের বলিরেখা দূর করতে দারুণ কার্যকর।
ওজন কমাতে
লেবুতে থাকা পেকটিন ফাইবার খিদে কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খালি পেটে লেবুর রস খান, তাদের ওজন দ্রুত হ্রাস পায়। সুতরাং ওজন বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা না করে প্রতিদিন সকালে লেবুর রস খান।
কিডনি পাথর
লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট’ নামক পাথর গঠনে বাধা দেয়। সাধারণ কিডনি পাথরগুলোর মধ্যে এটি একটি।
লিভার পরিষ্কার
লেবুতে বিদ্যমান সাইট্রিক অ্যাসিড কোলন, পিত্তথলি ও লিভার থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ
ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে লেবুর রস। তাই নিয়মিত ভাতের সঙ্গে লেবু খেতে পারেন। এত করে কাওয়ার রুচি বাড়বে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ দূর করে
যদি মূত্রনালীতে সংক্রমণ ঘটে। তাহলে প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস পান করুন। এটি আরোগ্য লাভে সাহায্য করবে।
ক্যানসার প্রতিরোধ
লেবু অনেক ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার।
লেমন ডিটক্স এর ধাপ গুলি:
লেমন ডিটক্সিং সাত দিন ব্যাপী চলা একটা সময়ব্যাপী প্রক্রিয়া।
এখানে লিকুইড এর উপরেই আপনাকে সাস্টেন করতে হয়।
তারপর আস্তে আস্তে নরমাল ডায়েটে ফেরত এনে ফ্যাট বার্ন করে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ফেরত আনা হয়।
এই সময় যদি আপনি পারছেন না এরকম মনে হয় তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ফ্রুট স্যালাড, কিনওয়া স্যালাড, স্প্রাউট, গ্রীন টি বা কিছু ভেজিস নিতে পারেন।
কিভাবে বানাবেন লেমনেড?
ফ্রেশ লেমন স্লাইস নিয়ে প্রেস করে তার জুস নিংড়ে রাখুন। এরপর তাতে মেপল সিরাপ, কেইন পেপার ও গরম জল এড করে ডিটক্স ড্রিংক রেডি করে ফেলুন।
স্বাদের জন্য খানিকটা মধু দিতে পারেন ভালো লাগবে। এটি হজম শক্তি বাড়াবে। ম্যাপল সিরাপ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই লো এবং পেপার ডিটক্স উপাদানে ভর্তি।
উপকারিতা:
ওবেসিটি রিস্ক কমায়। মেটাবলিজম স্ট্রং করে ক্যালোরি বার্ন করে।
যারা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে পারেন না কিন্তু বিজি লাইফস্টাইল এ অভ্যস্ত তারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেই সুফল পাবেন।
দৈহিক শক্তি বাড়ায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
দেখুন এই ডায়েট সবার জন্য নয়। নিজের স্পেসিফিক নিড জেনেই এই ডায়েট ফলো করা ভালো নাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
যদিও কম সময়ে দ্রুত ওজন কমানোর দাওয়াই এটি তাও এর অনেক সাইড এফেক্ট আছে। যেমন – বমিবমি ভাব, ঝিমুনি, দুর্বলতা,মাথাঘোরা ও ক্লান্তি।
পেশির পুষ্টি কমে যায় ফাইবার এর অনুপস্থিতিতে। ফলে পেশিক্লান্তি আসতে পারে।