ব্লুটুথ কি? ব্লুটুথ এর ব্যবহার, বৈশিষ্ট্য / সুবিধা ও অসুবিধা

ব্লুটুথ কি? ব্লুটুথ এর ব্যবহার, বৈশিষ্ট্য / সুবিধা ও অসুবিধাঃ আজকে আমরা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হচ্ছে ব্লুটুথ। ব্লুটুথ কি কাকে বলে এবং কতো প্রকার ও কি কি এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ব্লুটুথ কি?

ব্লুটুথ হচ্ছে- স্বল্প দূরত্বের ভেতর ফিক্সড ও মোবাইল ডিভাইসসমূহ থেকে তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি প্রোপ্রায়েটারি ওপেন ওয়্যারলেসত প্রযুক্তি স্ট্যান্ডার্ড হলো ব্লুটুথ। এর মাধ্যমে একটি পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Pan) সৃষ্টি হয় যেখানে উঁচু মানের নিরাপত্তা বজায় থাকে। দশম শতাব্দীর ডেনমার্কের রাজা হারাল্ড ব্লুটুথ এর নাম অনুসারে এই প্রযুক্তিটির নাম ব্লুটুথ রাখা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে, কম্পিউটার, মেডিক্যাল ডিভাইস এবং বাসাবাড়ির বিনোদন ক্ষেত্রের অনেক ডিভাইসে ব্লুটুথ প্রযুক্তিটি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ডিভাইসগুলোকে সংযুক্ত করতে এখন আর ক্যাবল সংযোগের প্রয়োজন পড়ছে না।

ব্লুটুথের বৈশিষ্ট্য

  1. কাছাকাছি দুইটি ডিভাইসের মধ্যে ডাটা স্থানান্তরে ব্লুটুথ রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে।
  2. ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের কোন লাইসেন্স ছাড়াই ২.৪ গিগাহার্টস ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডে চলতে পারে।
  3. ১০—১০০ মিটারের মধ্যে অবস্থানকারী ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
  4. ইনফ্রারেড ডাটা কমিউনিকেশনের ন্যায় দেয়াল বা অন্যকোন বাধা ডাটা ট্রান্সমিশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে না।
  5. কোনো পিকোনেটে (Piconet) একটি মাস্টার সর্বোচ্চ ৭টি স্লেভের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে।

ব্লুটুথ এর ব্যবহার

bluetooth এর মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইল থেকে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ করতে পারবেন। পরস্পর দুইটি কম্পিউটার থেকে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাইল বা ডাটা সহজে ট্রান্সফার করতে পারবেন। Bluetooth এর মাধ্যমে আপনি multiplayer game গুলো খেলতে পারবেন।

  • মোবাইল ফোনের সাথে hands-free হেডসেটের সংযোগ ঘটিয়ে সাউন্ড বা ভয়েস ডাটা ট্রান্সফারে ব্যবহৃত হয়।
  • মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ফাইল স্থানান্তরে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
  • কম্পিউটারের সাথে অন্যান্য ডিভাইস এর সংযোগ ঘটানো যায় এবং তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
  • পিসির ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস গুলোর সাথে তারবিহীন যোগাযোগে এটি ব্যবহৃত হয়।
  • জিপিএস রিসিভার, চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, বারকোড স্ক্যানার ও ট্রাফিক কন্ট্রোল ডিভাইস গুলোতে ব্যবহৃত হয়।
  • ইনফ্রারেড ব্যবহৃত হয়, এমন জায়গায় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • ডেডিকেটেড টেলিহেলথ ডিভাইসগুলোতে হেলথ সেন্সর ডাটাগুলোর short-range ট্রান্সমিশনে ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।

ব্লুটুথের বৈশিষ্ট্য/সুবিধা-

  • স্বল্প দূরত্বে ব্যাবহারিত ওপেন ওয়্যারলেস প্রটোকল।
  • স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রেডিও ওয়েব ব্যাবহার করা হয়।
  • এটি প্যান এর ওয়্যারলেস ভিত্তিক নেটওয়ার্ক ।
  • এর ফিকুয়েন্সি ব্যান্ড ২.৪ জিএইসজেট।
  • নেটওয়ার্ক কভারেজ এরিয়া ১ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত ।
  • ব্লুটুথ সাধারনত কনফিগার করতে হয় না।
  • বিদ্যুৎ খরচ কম।
  • ডিভাইসগুলোর মধ্যে কোন বাঁধা থাকলেও যোগাযোগে কোন অসুবিধা হয় না।
  • নেটওয়ার্ককে ব্যাবহারকারী নিয়ন্তণের জন্য পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করা যায়।

ব্লুটুথ এর অসুবিধাসমূহ-

  • ব্যান্ডউইথ তুলনামূলক কম।
  • নেটওয়ার্কের পরিসর কম যা দিয়ে ১০০ মিটারের বেশি দূরত্বে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব নয়।
  • ডেটা ট্রান্সফারে নিরাপত্তা কম।
  • ডাটা ট্রান্সফার রেট কম।
  • ১০০ মিটারের বেশি দূরত্বে যোগাযোগ করা সম্ভব না।
  • ব্লুটুথ অপশন অন করা থাকলে ফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশি খরচ হয়।
  • ব্লুটুথ ইন্টারনেট গতি অনেক কম।
  • এর মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সফারে সিকিউরিটি কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *