বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট: বিসিএস এ আবেদন করার সময় ক্যাডার চয়েস দেওয়া নিয়ে অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। প্রার্থীরা বুঝে উঠতে পারেন না কোন ক্যাডার প্রথমে দিবেন বা কেন প্রথমে দিবেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস এ মোট ২৭টি ক্যাডার রয়েছে। এ কোন ক্যাডারে যেতে চান বা কোন ক্যাডার পছন্দ করেন তার উপর ভিত্তি করে আবেদনের সময় প্রত্যেক প্রার্থীকে ক্যাডার দিতে হয়। ক্যাডার চয়েসের ভিত্তি করে ভাইভা বোর্ডে পরীক্ষকরা প্রার্থীদের প্রশ্ন করে থাকেন। এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট করবেন।
মনে করুন, আপনি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এ প্রথম চয়েজ দিলেন পররাষ্ট্র ক্যাডার। তাহলে ভাইভা বোর্ডে আপনাকে পরীক্ষকরা পররাষ্ট্র বা কূটনৈতিক বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। এজন্য যেই ক্যাডারে আপনি যেতে ইচ্ছুক বা পছন্দ করেন এবং ক্যাডার সম্পর্কিত আপনার পড়াশোনা রয়েছে, বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট-এ সেই ক্যাডার প্রথমে দিবেন।
অনেকেই আছেন যারা জানেননা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট কিভাবে দিতে হয়। বিশেষ করে যারা প্রথমবার বিসিএস দিবেন তারা বিসিএস ক্যাডার গুলোর কাজের ধরন, চাকরিতে কোনটার সুযোগ সুবিধা কেমন, অসুবিধা কি জানেন। তাদেরকে বলব বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিষয়গুলো জেনে বুঝে তারপর চয়েস দিবেন।
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক ২৭টি বিসিএস ক্যাডারের নাম ও ক্যাডারের ধরণ সম্পর্কে।
২৭টি বিসিএস ক্যাডারের নাম ও ক্যাডারের ধরণ (বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট)
ক্রমিক(Serial) | ক্যাডারের নাম (Cadre Name) | ক্যাডারের ধরণ (Cadre Type) |
১. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) | সাধারণ ক্যাডার |
২. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
৩. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (আনসার) | সাধারণ ক্যাডার |
৪. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (নিরীক্ষা ও হিসাব) | সাধারণ ক্যাডার |
৫. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সমবায়) | সাধারণ ক্যাডার |
৬. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (শুল্ক ও আবগারি) | সাধারণ ক্যাডার |
৭. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ইকনমিক) | সাধারণ ক্যাডার |
৮. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিবার পরিকল্পনা) | সাধারণ ক্যাডার |
৯. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (মৎস্য) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১০. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (খাদ্য) | সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১১. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) | সাধারণ ক্যাডার |
১২. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বন) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১৩. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১৪. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (স্বাস্থ্য) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১৫. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (তথ্য) | সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১৬. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পশু সম্পদ) | সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
১৭. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পুলিশ) | সাধারণ ক্যাডার |
১৮. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ডাক) | সাধারণ ক্যাডার |
১৯. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২০. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (গণপূর্ত) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২১. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে প্রকৌশল) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২২. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক) | সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২৩. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সড়ক ও জনপথ) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২৪. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিসংখ্যান) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২৫. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) | সাধারণ ক্যাডার |
২৬. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কারিগরি শিক্ষা) | কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
২৭. | বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বাণিজ্য) | সাধারণ এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার |
আজকের আর্টিকেল বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর পাশাপাশি আলোচনা করা হবে চাকরির ধরন, সুযোগ-সুবিধা, অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ।
বিসিএস এ অংশ নিয়েছিল এমন প্রার্থীদের ক্যাডার চয়েস নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। গবেষণায় পছন্দক্রম অনুযায়ী নিচে তার লিস্ট আপনাদেরকে দেখানো হলো। চাইলে আপনি এখান থেকে আপনার পছন্দের ক্যাডারটি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এ দিতে পারেন।
BCS Cadre Choice
১। পররাষ্ট্র
২। পুলিশ
৩। প্রশাসন
৪। শুল্ক ও আবগারি
৫। কর
৬। নিরীক্ষা ও হিসাব
৭। বাণিজ্য
৮। খাদ্য
৯। রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক
১০। আনসার
১১। তথ্য
১২। ডাক
১৩। সমবায়
১৪। পরিবার পরিকল্পনা
চলুন এখন এই ক্যাডারগুলো সম্পর্কে কিছুটা বিস্তারিত জেনে আসি।
বিসিএস পররাষ্ট্র
বাংলাদেশের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ক্যাডার পদ এই বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার । প্রার্থীদের প্রায় ৯০ ভাগ প্রার্থীরা তাদের পছন্দক্রমের বা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এ পররাষ্ট্র ক্যাডারকে প্রথমে রাখেন।
আপনি কি চাকরি করার পাশাপাশি বিদেশে ভ্রমণ করতে চান? মানুষের খুব কমন একটি ইচ্ছা নতুন নতুন জায়গা দেখা ও ঘুরা। নতুন নতুন সাক্ষাৎ করা। পররাষ্ট্র ক্যাডার এমন একটি ক্যাডার যেখানে আপনার এই সকল ইচ্ছা পূর্ণ হতে পারে। চাকরির পাশাপাশি আপনি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন নতুন নতুন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। তাহলে চলুন বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা কেমন।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ–সুবিধাঃ
- আপনাকে দূতাবাসে পদায়ন করা হলে দেশের নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১২০০ ডলার (মাসিক ভাতা) দেওয়া হবে। সাথে মাসিক ৩০০ ডলার বিনোদন ভাতা সহ বছরে ২০,০০০ হাজার ডলার দেওয়া হবে বাসা ভাড়া ভাতা হিসেবে। এছাড়া দুইটি সন্তানের সম্পূর্ণ পড়াশুনার খরচ এবং পরিবারের সদস্যদের মোট ৯০ ভাগ চিকিৎসা ভাতা সরকার বহন করবে।
- আপনি বিদেশে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স ছাড়া গাড়ি কিনতে পারবেন। কিন্তু সেই গাড়ি দেশে আনতে হলে অবশ্যই ট্যাক্স দিতে হবে।
- দেশে বিদেশে সরকারি খরচে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। আপনার থাকা, খাওয়ার সব খরচ সরকার বহন করবে।
- বিদেশে যেকোন অনুষ্ঠানে আপনি এবং আপনার পরিবারের সবাই অংশগ্রহন করতে পারবেন ও কুটনীতিক মর্যাদা পাবেন।
- বিদেশে প্রভাবশালীদের সঙ্গে তাদের মতো একই স্ট্যান্ডার্ডে রাজকীয় ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।
- বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রতিনিধি কম থাকায় নিশ্চিতভাবে রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত প্রমোশন পেয়ে যাবেন।
সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কোন ধরনের রাজনৈতিক চাপ থাকবে না। ফলে নিশ্চিতে আপনি আপনার নিজের কাজ করতে পারবেন।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- চাকরির প্রথমদিকে আপনাকে সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করতে হবে। ওই সময় আপনাকে দেওয়া সকল কাজই হবে প্রশিক্ষণমূলক। সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরির সময় টাইপিং থেকে শুরু করে সকল প্রকার দাপ্তরিক কাজ আপনাকেই করতে হবে। এসময় কাজের প্রতি অনীহা চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
- চাকরির প্রথমদিকে আপনাকে কোন গাড়ি দেওয়া হবে না। গণমাইক্রোবাসে করে অফিসে আসা-যাওয়া করতে হবে।
- ৬ বছরের মধ্যে ২টি দেশে পোস্টিং দেওয়া হবে। ৬ বছর পর অভিজ্ঞতা অর্জন ও দক্ষ হয়ে ৩ বছর ঢাকায় পোস্টিং দেওয়া হবে আপনাকে। এর কারণে বেশিদিন এক জায়গায় থাকতে পারবেন না।
সবশেষে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কথা বলতে গেলে যদি আপনি পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুযোগ-সুবিধাগুলোর কথা চিন্তা করেন।সেখানে অসুবিধাগুলো তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। দেশ-বিদেশে রাজকীয় ভাবে চলাফেরা করা নিজের দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করা, নিজের এবং নিজের পরিবারের জন্য এত সব সুযোগ-সুবিধা অন্য কোন বিসিএস ক্যাডারে পাওয়া যাবে না। আপনি যদি বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট-এ এটাকে প্রথমদিকে রাখুন।
বিসিএস পুলিশ
মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর পর আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে থাকে নিরাপত্তা। পুলিশ কাজ করে জনগণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। একদম মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে উপরমহল পর্যন্ত পুলিশের বিস্তৃতি রয়েছে। অন্য কোন বিসিএস ক্যাডার এর মধ্যে এত বিস্তৃত কর্মপরিধি খুঁজেও পাওয়া যাবে না।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলোঃ
- একজন পুলিশ ক্যাডারে তার পরিবারের বা আত্মীয়স্বজনকে যতটা সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে, অন্য কোন বিসিএস ক্যাডারে থেকে সেটা সম্ভব নয়। যেকোনো ধরনের সমস্যাই হোক না কেন, একজন পুলিশ ক্যাডার হিসেবে সব জায়গাতেই রয়েছে আলাদা ধরনের একটি সম্মান।
- রাজশাহীর সারদা একাডেমীতে প্রশিক্ষণ করার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি মাস্টার্স ও সম্পূর্ণ করে ফেলতে পারবেন।
- চাকরির প্রথমদিক থেকেই বডিগার্ড, বাংলো, ভাতা, গাড়ি সহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যাবেন।
- বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য সরকারি খরচে দেশ বিদেশে যেতে পারবেন। এছাড়া ও জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাবেন। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষার প্রতি মিশনে ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা সম্মানি পেয়ে যাবেন।
- সাধারণ পুলিশি কাজ করতে ইচ্ছুক না হলে স্পেশাল ফোর্স, এসএসএফ, গোয়েন্দা, র্যাব সহ আরও অন্যান্য ফোর্স গুলোতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
- সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে মর্যাদা, সম্মান, খ্যাতি অন্যদের থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি পাবেন।
- দেশের পরিকল্পনা গুলো নিজে মাঠে থেকে বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের চাকরির কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ নেই। দিনে-রাতে ২৪ ঘন্টাই ডিউটি করতে হবে। এই চাকরিতে বড় কোন ছুটি কল্পনাও করা যায় না। যদি রাত ২ টার সময়ও কল আসে, তখনও বিছানা ছেড়ে ডিউটিতে যেতে হবে।
- বর্তমান সময়ে পুলিশ ক্যাডারের ইমেজ একটু খারাপ। সাধারণ মানুষের চোখে একজন পুলিশ মানেই ঘুষখোর। যদিও বিষয়টি বাস্তব নয়।
- এই চাকরিতে অবৈধ পথে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনেক। তবে আপনি নিজে সৎ থাকলে এগুলো অনেকটাই এড়ানো যাবে
- পুলিশ ক্যাডারে রাজনৈতিক প্রেশার অনেক বেশি। যাদের কাছে পলিটিক্স ভালো লাগে না, তারা পুলিশ ক্যাডার হয়ে জুতসই করে উঠতে পারবেন না।
বিসিএস এডমিন বা বিসিএস প্রশাসন
সরকার কর্তৃক সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ, প্রতিবাদ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, সকল ক্যাডারের সমন্বয়ে এই কাজগুলো সম্পন্ন করে থাকেন প্রশাসন বা এডমিন বিসিএস ক্যাডারা।
পূর্বকালীন সময়ে পুলিশের উপর এডমিন ক্যাডারদের কিছু কর্তৃত্ব ছিল। বিসিএস এডমিনরা উপজেলা পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে ম্যাজিট্রেসি করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্টের আওতাধীনে চলে যাওয়ার ফলে এডমিনদের জৌলস কমে গেছে। তাই বর্তমানে বিসিএস এডমিন ক্যাডার ৩য় স্থানে নেমে গেছেন।
বিসিএস এডমিন বা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- এডমিন ক্যাডারদের মধ্যে থেকে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ নিয়োগ হয় সচিবালয়ে। তাই আপনি এডমিন ক্যাডার হতে পারলে সচিবালয়ে পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এমনকি আপনি যদি কম বয়সে চাকরিতে জয়েন করতে পারেন তাহলে ক্যাবিনেট সচিব পর্যন্ত হয়ে যেতে পারবেন, যার মর্যাদা সংসদ সদস্য চেয়েও বেশি।
- বিভিন্ন অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
- বিদেশ ভ্রমণ সহ বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। সরকারি খরচে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন ও ট্রেনিং করতে পারবেন।
- স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার ক্ষমতা পেয়ে যাবেন। এছাড়া গাড়ি, বাংলোর সুবিধা তো রয়েছেই।
বিসিএস এডমিন ক্যাডারের অসুবিধাগুলোঃ
- বিসিএস এডমিনের উপর রাজনৈতিক চাপ বেশি থাকে। কর্মক্ষেত্রে নিজের স্বাধীনমত কাজ করার সুযোগ অনেকটাই কম। এই ক্যাডারেও রয়েছে দুর্নীতির বেশ অভিযোগ। কিন্তু আপনি নিজে সৎ থাকলে নির্দ্বিধায় কাজ করতে পারবেন।
- অন্যান্য ক্যাডার হতে অনেকেই সচিবালয়ে আসার উদ্দেশে এডমিন ক্যাডারে চলে আসেন। এজন্য পদোন্নতি অনেকটা ধীরগতির বলা চলে।
- কাজে বৈচিত্র্যতা অনেকটাই বেশি এবং ট্রান্সফারও ঘন ঘন হবে। ফলে, কোন জায়গায় বেশিদিন থাকতে পারবন না। তাই নতুন পরিবেশে যারা সহজেই নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারেন না, তাদের জন্য একটু সমস্যা হবে।
বিসিএস কাস্টমস
অনেকেই কাস্টমস ক্যাডার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট -এর প্রথম চয়েজ এ রাখেন। এই বিভাগে কোন ঝামেলা না থাকায় নিরিবিলি পরিবেশে শান্তি মত কাজ করা যায়। চাকরির শুরুর দিকে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারি কমিশনার (কাস্টমস) পদে যোগদান করতে হবে।
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের সু্যোগ-সুবিধাঃ
- চাকরির শুরুতেই আপনার যাতায়াতের জন্য গাড়ি দেওয়া হবে।
- অফিস থাকবে নিরিবিলি পরিবেশে। অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন শিল্পপতিদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সমাজের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিমন্তন্ন পাবেন এবং ধ্বনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওঠাবসা তো থাকবেই।
- এই বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে বৈধ উপায়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। চোরাচালান ধরে দিতে পারলে সরকার থেকে আপনাকে মূল্যভেদে ১০-৪০% পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।
- সাধারন চাকরি করতে ভালো না লাগলে শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের অসুবিধাগুলোঃ
- কাস্টমস ক্যাডার দুর্নীতির জন্য অনেক সমালোচিত একটি পেশা। দুর্নীতি করার জন্য অনেক সুযোগ কর্মক্ষেত্রে রয়েছে। কিন্তু সৎ থাকলে কোন প্রকার দুর্নীতি ছাড়াই বৈধ উপায়ে চাকরি করতে পারবেন। চোরাচালান ধরে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত অনেক টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়া যাবে।
- পদোন্নতি অতিরিক্ত কমিশনার পর্যন্ত অনেকটাই ভালো কিন্তু অনেকেই আছেন যারা চাকরির এক পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারে চলে যান সচিবালয়ে চাকরির উদ্দেশে। এদিকে রাজস্ব বোর্ডের প্রধান ও এসে থাকেন প্রশাসন ক্যাডার হতে।
বিসিএস কর
আয়কর বিভাগের ক্যাডাররা কাজ করে থাকেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীন এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) এর একটি শাখাতে। সরকারের প্রত্যক্ষ সকল ধরনের কর এই বিভাগে নেওয়া হয়ে থাকে। ক্ষমতা কাটাতে চাইলে এই ক্যাডার আপনার জন্য নয়। তবে প্রমোশন পেয়ে উপরে উঠতে পারলে ক্ষমতা দেখানো কাটানোর মত যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। বিসিএস কর ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য।
বিসিএস কর ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- কর ফাঁকি ধরতে পারলে ভালো পরিমাণ টাকার গ্রান্ট বা রিওয়ার্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
- প্রথমদিকে পদোন্নতি বেশ ভালোই থাকে। কিন্তু চাকরির মাঝপথে পদোন্নতি কিছুটা স্থবির হয়ে যায়। কারণ প্রশাসন ক্যাডার থেকে অনেকেই আসতে চান এই বিভাগের উর্ধ্বস্থানীয় পদে।
- সারা বছরে কাজের চাপ খুব একটা নেই বললেই চলে, শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত।
- দেরী করে চাকরিতে যোগদান হলে বিসিএস কর ক্যাডারে আসা লাভজনক।
বিসিএস কর বিভাগের অসুবিধাগুলোঃ
- এই চাকরির শুরুরদিকে সুবিধা মোটামোটি বেশ ভালই থাকে কিন্তু কাস্টমস ক্যাডার থেকে তুলনামূলক অনেক কম।
- বিশেষ করে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময়ে কাজের অনেক প্রেশার অনেক থাকে। এমনকি ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময়ে রাত ১০-১২টা পর্যন্ত কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।
- রাজস্ব বোর্ডের প্রধান কিন্তু নেওয়া হয় প্রশাসন ক্যাডার হতে। এজন্য যতই পদোন্নতি হোক রাজস্ব বোর্ডের প্রধান হওয়া যাবে না।
বিসিএস অডিট বা বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব
সরকারের যত আয় এবং ব্যয় হয়ে থাকে, তার হিসাব ও নিরীক্ষা করে থাকেন অডিট ক্যাডাররা। এই বিসিএস অডিট ক্যাডার অনেক সম্মানজনক একটি চাকরি। সবাই সমীহ করে চলেন অডিট ক্যাডারদের।
প্রশ্ন আসতে পারে, কেন বিসিএস অডিটদের সবাই সমীহ করে চলে? শুনুন তাহলে…সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগেই খরচ ও আয়ের হিসেবে কিছু না কিছু ভুল থেকে থাকে। আর এই ভুলগুলো ধরে থাকেন বিসিএস অডিট ক্যাডাররা। তাই অন্য সব বিসিএস ক্যাডাররা অডিট ক্যাডারদের কিছুটা হলেও ভয় পেয়ে থাকেন। দেশের সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন বিসিএস অডিট ক্যাডাররা।
বিসিএস অডিট ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগেই অডিট বিভাগ রয়েছে। তাই কাজের ভিন্নতা দেখতে পাবেন।
- সরকারি খরছে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ট্রেনিং করতে পারবেন সেটাও ফ্রিতে।
- আপনাকে সম্মান দেওয়া হবে প্রশাসন বা পুলিশ ক্যাডারদের মতো।
- সর্বোপরি স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে কাজ করতে পারবেন এবং বৈধ ও সৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
- চাকরি থেকে অবসর প্রাপ্ত হলেও বিভিন্ন কোম্পানি থেকে আপনার কাছে অডিট করার অফার আসতে থাকবে।
বিসিএস অডিট ক্যাডারের অসুবিধাঃ
অন্যান্য কিছু ক্যাডারের মতো এতেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এই ক্যাডারে। চাকরিতে থাকাকালীন বেশ কিছু দুর্নীতির অফার আসবে আপনার কাছে। একটা পেপারে সাইন করাতেই হয়তো দেওয়া হবে ৫০ লাখ টাকা। তবে সদিচ্ছা আর সততা থাকলে কোন দুর্নীতি আপনার কাছে আসতে পারবেনা।
বিসিএস খাদ্য
আমরা কেউই খাদ্য ছাড়া কেউ বেঁচে থাকতে পারব না। এই খাদ্যের উৎপাদন, বিপণন, বিতরণ নিশ্চিত করে থাকেন খাদ্য বিভাগের ক্যাডাররা। চাকরির শুরুরদিকে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। তারপরে আপনাকে পদায়ন করা হবে খাদ্য অধিদপ্তরে। এরপর ওখান থেকে জেলা পর্যায়ে কাজ করাতে পারবেন।
বিসিএস খাদ্য বিভাগের সুযোগ-সুবিধাঃ
- কোন ঝামেলা নেই এই চাকরিতে। কাজেরও তেমন কোন প্রেশার থাকে না। বেশ সহজেই কাজ করা যাবে।
- মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখতে পারবেন।
- যারা কৃষক প্রেমী রয়েছে তারা এই ক্যাডারে আসতে পারেন। এই চাকরিতে আসতে পারলে দেশের মূলধারার কৃষিকাজের স্বচ্ছতা নির্ভর করবে আপনার উপর।
বিসিএস খাদ্য বিভাগের অসুবিধাঃ
- চাকরির শুরুতে আপনাকে গাড়ি দেওয়া হবে না।
- ক্ষমতা দেখানোর মত তেমন কোন সুযোগ নেই।
- এমনকি অতিরিক্ত আয় যেমন: সরকার কর্তৃক কোন ধরনের অর্থ পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ নেই।
বিসিএস বাণিজ্য
বাণিজ্য ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে দেশের আমদানি ও রপ্তানির সাম্যাবস্থা দেখা। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ে অথবা বিভাগীয় শহরে পোস্টিং করা হবে।
বাণিজ্য বিসিএস ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- আপনার যাতায়াতের জন্য গাড়ি দেওয়া হবে।
- এই চাকরিতে কাজের তেমন চাপ নেই। তাই বেশি সময় ধরে ছুটি কাটাতে পারবেন।
- বাণিজ্য বিসিএস ক্যাডারে পদোন্নতি ভালো ও দ্রুত পাওয়া যায়।
- বিদেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে আপনাকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।
বাণিজ্য বিসিএস ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- এই চাকরিতে সম্মান তুলনামূলক কম।
- অদূর ভবিষ্যতে একীভূত হবার সুযোগ আছে বাণিজ্য ক্যাডারের সাথে প্রশাসন ক্যাডারের।
বিসিএস আনসার
বিসিএস আনসার ক্যাডারে চাকরি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পড়ে ডিউটি করতে হবে পুলিশের মতো। চাকরির শুরুরদিকে আপনাকে আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা এডজুটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। আনসার ক্যাডাররা পুলিশের মতো আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখেন না। তাদের কাজ হচ্ছে কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়ক হিসেবে কাজ করা।
আনসার বিসিএস ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- চাকরির শুরুতেই পাওয়া যায় গাড়ি, বাড়ি, বডিগার্ড। একজন পুলিশ ক্যাডারের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে; একজন বিসিএস আনসার ক্যাডারদের জন্যও সেই সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
- পদোন্নতির অবস্থাও বেশ ভালো। সবকিছু ঠিক থাকলে মহাপরিচালক পর্যন্ত হতে পারবেন।
- বিদেশে মিশনে কাজ করার জন্য আপনাকে সুযোগ দেওয়া হবে।
আনসার বিসিএস ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- অনেকেই এই ক্যাডারে আসতে চান না একটা কারণে, সেটা হচ্ছে মহাপরিচালক হলেও প্রতিরক্ষা বিভাগের অধীনে কাজ করতে হয়।
- পুলিশের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকলেও ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ পাবেন না।
বিসিএস তথ্য
প্রচারেই প্রসার বলে একটা কথা রয়েছে আমাদের দেশে। একজন বিসিএস তথ্য ক্যাডারের কাজ হচ্ছে সরকারি কাজের তথ্য-উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে পৌছে দেওয়া। চাকরির শুরুরদিকে সহকারি পরিচালক বা সমমানের পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে প্রধান তথ্য অফিসার।
তথ্য বিসিএস ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- খুব সহজেই মিডিয়ার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। খুব সহজেই নিজের পরিচিতি বিস্তার করার সুযোগ রয়েছে।
- এই চাকরিতে কাজের প্রেশার নেই বললেই চলে। এমনকি নেই কোন রাজনৈতিক চাপ।
- এই চাকরিতে মন না লাগলে পুল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস তথ্য ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- প্রশাসনিক সম্মান ও ক্ষমতা অনেকটাই কম।
- কাজের পরিধি খুবই কম।
- এই কাজগুলো একই ধরনের হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে একঘেমেয়িতা চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আপনি যদি মিডিয়ার সাথে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এ বিসিএস তথ্য ক্যাডার প্রথমে দেন।
বিসিএস ডাক
বিসিএস ডাক ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে ডাক বিভাগের সকল ধরনের কাজের দায়িত্ব এই ক্যাডারদের।ডাক বিভাগের সকল কাজ বিসিএস ডাক ক্যাডাররাই করে থাকেন। ডাক বিভাগে নিয়োগ পাবেন সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল হিসেবে। বিসিএস ডাক ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে মহাপরিচালক। সরকারি চিঠিপত্র আদান-প্রদান থেকে শুরু করে মানি অর্ডার, ব্যক্তিগত চিঠি, ডাক বিভাগের সঞ্চয়ী হিসাব সহ অন্যান্য সকল দাপ্তরিক কাজগুলোর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন বিসিএস ডাক ক্যাডারা।
বিসিএস ডাক বিভাগের সুযোগ-সুবিধাঃ
- এই চাকরিতে কাজের কোন প্রেশার নেই। ডিউটি টাইম ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত।
- পর্যাপ্ত ছুটি পাবেন।
- ২০ বছর চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- পদোন্নতি থাকলেও অনেক ধীর।
- ক্ষমতা, সম্মান কোনটাই নেই বললেই চলে।
বিসিএস সমবায়
সমবায় বিসিএস ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন সমবায় সমিতির লাইসেন্স প্রদান থেকে শুরু করে বার্ষিক অডিট পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। চাকরির শুরুতে নিয়োগ দেওয়া হবে সহকারী নিবন্ধক হিসেবে। পরবর্তীতে জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে পোস্টিং হয়ে থাকে।
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- কাজের কোন চাপ নেই।
- কোন রাজনৈতিক চাপ নেই।
- চাকরির শেষেরদিকে প্রশাসন ক্যাডারে উপসচিব হওয়ার জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- কোন ধরনের গাড়ি, বাড়ির পাবেন না।
- প্রভাব প্রতিপত্তি একদমই একেবারেই নেই।
বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক
বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক ক্যাডারদের কাজ হচ্ছে রেলওয়ে পরিবহণ, উন্নয়ন, রেলওয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা। চাকরির শুরুরদিকে সহকারী ট্রাফিক সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে আপনাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে মহাপরিচালক।
বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- কাজের কোন চাপ নেই।
- প্রয়োজনীয় সব ছুটির ব্যবস্থা রয়েছে।
- আপনি চাইলে ১৮/২০ বছর পরে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।
বিসিএস রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- পদোন্নতি থাকলেও অনেক ধীরগতির। পদোন্নতির মাধ্যমে মহাপরিচালক পদে যাবার সম্ভাবনা অনেক কম। কারণ কারিগরি ক্যাডার থেকে মহাপরিচালক পদে নিয়োগ হয়ে থাকে।
- ক্ষমতা, সম্মানের ক্ষেত্রে এই ক্যাডার অনেক পিছনে।এজন্য প্রায় সবাই এই ক্যাডার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর নিচের দিকে রাখেন।
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা
পরিবার পরিকল্পনার জন্য সরকারি সব ধরনের প্রোগ্রাম বা আয়োজন সম্পূর্ণ হয় বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারদের মাধ্যমে। এই ক্যাডারে পোস্টিং হয়ে থাকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বা বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে। আপনি এক ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়ার পর, জনগনের সাঙ্গে মাঠ পর্যায়ে মিলেমিশে পরিবার পরিকল্পনার কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনার ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাঃ
- এই কাজের তেমন একটা চাপ নেই।
- প্রকল্পগুলো নিজেই বাস্তবায়ন করার সুযোগ রয়েছে।
- চাকরি পছন্দ না লাগলে পরবর্তীতে আপনি প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা বিসিএস ক্যাডারের অসুবিধাঃ
- আপনার পোস্টিং উপজেলা পর্যায়ে হোক বা জেলা পর্যায়ে, প্রশাসন ক্যাডারের অধীনেই আপনাকে কাজ করতে হবে। অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অধীনে আপনাকে কাজ করতে হয়।
- অনেক সময় এমন হয়, নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র প্রশাসন ক্যাডারে যদি নিয়োগ হয়; তখন তার অধীনে আপনাকে কাজ করতে হবে।
এইসব কারণগুলোর জন্যই অনেকেই এই ক্যাডারকে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর নিচে রাখেন।
উপরে উল্লেখিত ক্যাডারগুলোই প্রার্থীরা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট-এ রাখেন। তবে প্রত্যেকটি প্রার্থীর ইচ্ছার উপর বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট ভিন্ন হয়ে থাকে। সবাই যদি পররাষ্ট্র ক্যাডার প্রথম চয়েসে দিকে থাকে; তাহলে আপনাকেও তাই দিতে হবে বিষয়টি মতেও এমন নয়। যেই কাজগুলো করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন কোন ক্যাডার আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর উপরে রাখুন। তাহলে কাজের মধ্যে কখন অনিহা বা অলসতা আসবে না বরং স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন।
বাকি অন্য সব বিসিএস ক্যাডারগুলো হচ্ছে কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডার। কারিগরি ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ সবার থাকে না। প্রকৌশলী ক্যাডারে যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রকৌশলী বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া লাগবে।
Related Keyword: বিসিএস ক্যাডার চয়েস, বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট, বিসিএস ক্যাডার, বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট কোড, বিসিএস ক্যাডার চয়েস কিভাবে দিব, ৪৩ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট, how many cadre in bcs, how many bcs cadre in bangladesh, when bcs exam start.