তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহ হল

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহ হল

১। Access to Information বা তথ্য পাওয়া সহজ হয়।

২। পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় চিন্তা করা সম্ভব অর্থাৎ যে কোন স্থানের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব হয়।

৩। তথ্যের খরচ কমে যায় এবং ব্যবস্থাপনায় ব্যয় সংকোচন হয়।

৪। জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়।

৫। দক্ষতা ও কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।

৬। মনুষ্য শক্তির অপচয় রোধ হয় ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সহজ হয়।

৭। ই-কমার্স ও ই-বিজনেসের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ৮। ই-গর্ভানেন্স চালুর মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হয় ইত্যাদি।

৯। মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা পাওয়া সহজতর হয়।

১০। শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণ করা বা প্রদান করা সহজতর হয়।

সমাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব

সমাজ জীবনে আইসিটির ইতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি কিছু নেতিবাচক প্রভাবও লক্ষ্য করা যায়। দিন দিন অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থার জনপ্রিয়তার কারণে মানুষ সামনাসামনি আলোচনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। 

ফলে মানুষ অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক ও অন্তর্মুখী হয়ে যাচ্ছে এবং হ্যাকিং, পর্ণোগ্রাফী, অনলাইন গ্যাম্বলিং ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকান্ডে আসক্ত হচ্ছে। এভাবে আইসিটির মানুষের নৈতিক অবক্ষয়েরও একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মক্ষেত্রে আইসিটি যেমন কারও জন্য আশীর্বাদ তেমনি কারও জন্য অভিশাপ। 

কারণ কম্পিউটার ও বিভিন্ন আইসিটি পণ্য কর্মক্ষেত্রে মানুষের স্থান দখল করে নিচ্ছে বলে অনেক মানুষ তাদের চাকরি হারাচ্ছে।

দিন দিন শিশুরা বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার গেমস-এর দিকে বেশি ঝুঁকে যাচ্ছে বলে আউটডোর গেমস-এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। অথচ শিশুর সঠিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য আউটডোর গেমস-এর কোন বিকল্প নেই। 

এভাবে আইসিটি শিশুর শারীরিক বিকাশে বাধার সৃষ্টি করছে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে, অধিক সময় ধরে কম্পিউটার ব্যবহার করলে বিভিন্ন প্রকারের মানসিক ও চোখের সমস্যা দেখা দেয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কুফল

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির হাজারো সুফলের সাথে কিছু কিছু কুফল পরিলক্ষিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিচে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কিছু কুফল তুলে ধরা হলো

অশ্লীলতা : টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটে অনেক অশ্লীল এবং নগ্ন প্রচারণায় মানুষের নৈতিক চরিত্রের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও কিশোরদের বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।

গোপনীয়তা : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে যা মোটেই কাম্য নয়।

ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সর্বত্রই অটোমেশনের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিনিয়তই বেকারত্ব বাড়ছে।

শারীরিক সমস্যা : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিশেষ করে কম্পিউটারকে বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য সaমস্যার জন্য দায়ী করা যায়- চোখের উপর চাপ, কব্জীর ক্ষতি, পিঠের সমস্যা, মানসিক চাপজনিত সমস্যা, পেটের আলসার প্রভৃতি।

সামাজিক সমস্যা সামাজিক যোগাযোগ সাইট যেমন ফেস বুক, টুইটার ইত্যাদির ব্যবহারের ফলে বিবাহ-বিচ্ছেদের মত ঘটনাও ঘটছে। শিশু কিশোররা ভায়োলেন্স গেইম খেলার প্রভাবে এবং অশ্লিলতার কারণে সামাজিক অপরাধ ক্রমেই বাড়ছে যা বর্তমান সময়ের একটি বড় সামাজিক সমস্যা।

তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমাজে সুফল না কুফল বয়ে আনবে, সেটা নির্ভর করছে ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তা ও চেতনার উপর। কেউ ইচ্ছে করলে একে খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারেন, আবার ভাল কাজেও ব্যবহার করতে পারেন। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমাজের জন্য এক বিরাট আশীর্বাদ। তাই এর নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, দ্রুত প্রসার এবং উন্নয়ন পৃথিবীকে আরও সুন্দর এবং সমৃদ্ধ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *